সোমবার, ১৩ মে, ২০১৯

আত্মকথন





যখন আমি পিচকু ছিলাম,মেডিকেল কি জানতাম না।তবে এটা জানতাম,যারা ডাক্তার তারা অন্য কোনো গ্রহ থেকে ছিটকে পড়া অতি মানব টাইপের কেউ।।যারা কিনা প্রসবের পরে,দমবন্ধ হওয়া বাবা-মায়ের প্রথম বাবুটিকে পায়ের গোছা ধরে সাড়ে বারোটা চক্কর দিয়ে কাঁদিয়েছিলো। ক্লাস টেন অবধিও আমি জানতাম না,,আবুল হাসান,গাজি আজমল স্যারের বই পড়ে অতিমানব হওয়ার সূচনা করতে হয়।

যখন জানলাম,ভিনগ্রহ থেকে ছিটকে পড়া বস্তুটি কি এবং সাধারন মানুষ কিভাবে এমন বস্তু হতে পারবে...তখনই ..

হ্যাঁ,ঠিক তখনই,আমার মনের গহীনে অদৃশ্যমান জ্ঞানশূন্য ঘরে আশার বালুকনা পিলার বাধঁতে শুরু করলো।

ডাক্তার!!
শব্দটা শুনলেই বুকের বামপাশে ছ্যাঁত করে উঠে,এই যেন আরেকটা পিলার হয়ে গেলো!বুকের ধুকধুকানি বাড়তে লাগলো,পড়ার চেয়ারে হেলান দিয়ে, চোখ বুজে থেকে, কল্পনায় এপ্রন গায়ে দিয়ে ক্লাস করার ভিসা পেয়ে শীতল সুখে চেয়ারেই গভীর ঘুমে এলিয়ে পড়লাম,যাতে কোনো দিন সেই ক্লাস শেষ না হয়!!
হ্যাঁ,ভিসা আমি ঠিকই পেয়েছিলাম,কিন্তু এপ্রন গায়ে দিয়ে নয়,বাকৃবি র পুকুরে। (fisheries in BAU)
গায়ে এপ্রন পড়ার যে বালুকা ঘর তোলার জন্য পিলার বানিয়েছিলো,তা একবারে ভেঙ্গে যায় নাই।লেগে গেলাম চুনকাম করার জন্য।( 2nd time dite)

মেডিকেলের কোনো বড় ভাই/বোনকে হঠাৎ দেখতে পেলে,একদৃষ্টিতে ক্ষুদার্ত পাখির ছানার মত তাকিয়ে থাকতাম তার দিকে, তার ভিতরে কি যেন খুঁজতাম,সে যেনো সোনার খনি তার ভিতরে লুকিয়ে রেখেছে,যা দিয়ে আমার অন্তরের কম্পন কমাতে পারবে।(হঠাৎ করে কেউ আমার এ তাকানো দেখতে পেলে বলতো,ছিঃ! বদ নজর দিয়ে তাকিয়ে আছে!!)

কিন্তু হায়!যখন এপ্রন পড়ার ভিসা আমার হাতে উপরওয়ালা ধরিয়ে দিলো,তখন ভাই/আপুরা দূরে থাক্, নিজের দিকেই তাকানো ইচ্ছা করে না!

এটাই যেনো চলমান জগতের প্রবাহমান ধারা,রহস্যময় মানুষগুলোকে জানতে ইচ্ছা করে,তাদের মত নিজেকে কল্পনা করতে পারাও যেনো জন্মকে সার্থক মনে হয়,,কিন্তু নিজে যখন রহস্যের একচ্ছত্র অধিকারী হয়ে রহস্যের চেয়ায়ে তার জায়গা দখল করে নেয়,তখন সব আগ্রহের ইতি ঘটে।।

কোন মন্তব্য নেই: