রোগ_বাতায়ন-২ একজিমা(Eczema)– একটি পরিচিত অস্বস্তি
🌿 একজিমা কী?
একজিমা হলো ত্বকের একটি প্রদাহজনিত সমস্যা, যাতে চুলকানি, লালচে ভাব, শুষ্কতা ও কখনও ফোসকা দেখা দিতে পারে। এটি সংক্রামক নয়, কিন্তু বেশ অস্বস্তিকর।
এটি মূলত একটি ইমিউন সিস্টেমের সমস্যা যার ফলে ত্বকের প্রাকৃতিক আর্দ্রতা বজায় রাখার ক্ষমতা কমে যায় এবং ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসের সংক্রমণের সম্ভাবনা বাড়ে। এর আর একটি বৈশিষ্ট্য  হলে স্ক্র্যাচ করলে, এই ঘাগুলি সংক্রমিত হতে পারে।
🧬 কেন হয় একজিমা?
এর পেছনে থাকতে পারে –
↗️জেনেটিক কারণ: যাদের পরিবারে অ্যালার্জি, হাঁপানি বা একজিমার ইতিহাস রয়েছে, তাদের একজিমা হওয়ার ঝুঁকি বেশি।
↗️অ্যালার্জেন: ধুলাবালি, পোষা প্রাণীর লোম, ফুলের রেণু এবং কিছু খাবার অ্যালার্জি সৃষ্টি করে একজিমা বাড়াতে পারে।
↗️পরিবেশগত কারণ: অতিরিক্ত ঠাণ্ডা, গরম, ঘাম বা শুষ্ক আবহাওয়া একজিমা হওয়ার কারণ হতে পারে।
↗️ইমিউন সিস্টেমের সমস্যা: ত্বকের ব্যারিয়ার ফাংশন দুর্বল হলে ত্বক সংবেদনশীল হয়ে পড়ে এবং একজিমা দেখা দেয়।
↗️অতিরিক্ত স্ট্রেস: মানসিক চাপ একজিমা বাড়াতে পারে।
👶 শিশুদের একজিমা:
শিশুদের মধ্যে এটপিক ডার্মাটাইটিস নামে এক ধরনের একজিমা বেশি দেখা যায়। গাল, কনুই, হাঁটুতে লালচে ও শুষ্ক ভাব দেখা দেয়।
🧓 বয়স্কদের একজিমা:
✅শুষ্ক ত্বক
✅ত্বকে তীব্র চুলকানি যা রাতে জ্বলে
✅মুখ, ঘাড়, বুক, হাত, কব্জি, গোড়ালি এবং পায়ে লাল থেকে বাদামী-ধূসর ম্যাকুলস বা প্যাপিউলস তৈরি হয়      
✅ফাটা এবং আঁশযুক্ত ত্বক
✅এপিডার্মিসে ক্ষুদ্র, তরল-ভরা, উত্থিত বাম্প দেখা যায়। আপনি যদি তাদের স্ক্র্যাচ করেন তবে তারা তরল নিঃসরণ করতে থাকে
✅সংবেদনশীল এবং ফোলা ত্বক
🧴 চিকিৎসা ও ব্যবস্থাপনা:
🔹 ত্বক মোয়েশ্চারাইজ করে রাখা (অ্যালার্জি-ফ্রি লোশন/ক্রিম)
🔹 অ্যালার্জির উৎস পরিহার করুন।
🔹 প্রয়োজনে ডাক্তারি পরামর্শে স্টেরয়েড বা অ্যান্টিহিস্টামিন ওষুধ ব্যবহার করুন।
🔹নখ দিয়ে স্ক্র্যাচ করা থেকে পরিহার করুন।
🔹আক্রান্ত স্থান ঢেকে দিন
ত্বকের সুরক্ষার জন্য একটি পরিষ্কার এবং জীবাণুমুক্ত ব্যান্ডেজ দিয়ে আক্রান্ত স্থানটি ঢেকে দিন। আচ্ছাদন জীবাণুকে প্রবেশ করতে বাধা দেয় এবং এটি আপনার স্ক্র্যাচিং থেকেও বাঁচায়।
🔹একটি গরম স্নান করুন
10 থেকে 15 মিনিটের জন্য একটি উষ্ণ স্নান করে নিতে পারেন,স্নানের পরপরই ত্বকের হাইড্রেশন ধরে রাখতে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
🔹হালকা সাবান ব্যবহার করুন
 ত্বকে শুধুমাত্র হালকা সাবান ব্যবহার করুন। সুগন্ধিযুক্ত সাবান বা কৃত্রিম রংযুক্ত সাবান ব্যবহার করবেন না, কারণ তারা আপনার ত্বককে আরও জ্বালাতন করতে পারে। সাবান লাগানোর পর আপনার শরীর ভালো করে ধুয়ে ফেলতে ভুলবেন না।
🔹মানসিক চাপ পরিহার করুন।
🚫 যা এড়ানো উচিত:
✖️ সুগন্ধিযুক্ত প্রসাধনী
✖️ অতিরিক্ত গরম পানি
✖️ ত্বক চুলকানো বা ঘষা
✅ একজিমা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব, যদি সচেতন থাকেন। চিকিৎসা নিন, সুস্থ থাকুন।
📞আপনার ত্বকের যেকোনো সমস্যায় পরামর্শ নিতে পারেন আমাদের মেসেঞ্জারে যোগাযোগ করে। 

কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন